E-Learning Info
Go to content
বর্ণ
বর্ণ
ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্নকে বর্ণ বলে।
বর্ণ ও অক্ষর কি এক?
বর্ণ ও অক্ষর এক নয়। যদিও বাংলায় এ দুটি শব্দকে এক অর্থে ব্যবহার করা হয়। একটি শব্দের যে অংশটুকু একসাথে উচ্চারিত হয় তাকেই অক্ষর (Syllable) বলে। অক্ষরের মধ্যে একাধিক বর্ণ থাকতে পারে।
অক্ষর এর প্রকারভেদ
অক্ষর দুই প্রকার- স্বরান্ত (open) ও ব্যঞ্জনান্ত (Closed)। যে অক্ষর স্বরে সমাপ্ত হয় সেটাকেই স্বরান্ত অক্ষর বলে। যেমন- ভাল, কি, নিয়মিত ইত্যাদি।
যে অক্ষর ব্যঞ্জনে সমাপ্ত হয় সেটিকেই ব্যঞ্জনান্ত অক্ষর বলে। যেমন- রাত, বেশ, দিন ইত্যাদি।
বাংলা ভাষায় বর্ণ সংখ্যা
বাংলা ভাষায় বর্ণ সংখ্যা ৫১টি। এই বর্ণ সমষ্টিকে একত্রে বর্ণমালা বলে। ধ্বনির প্রভেদ অনুযায়ী বাংলা বর্ণমালাকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে- স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ।
স্বরবর্ণ
যে বরর অন্য বর্ণের সাহায্য ছাড়া উচ্চারিত হয় তাকে স্বরবর্ণ বলে।
বাংলা স্বরবর্ণ- অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, এ, ঐ, ও, ঔ
ব্যঞ্জনবর্ণ
যে বর্ণ অন্য বর্ণের সাহায্য ছাড়া উচ্চারিত হতে পারেনা তাকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলে।
বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ- ক খ গ ঘ ঙ        চ ছ জ ঝ ঞ
                  ত থ দ ধ ন         ট ঠ ড ঢ ণ
                  প ফ ব ভ ম        য র ল ব
                   শ, ষ, স হ          ড় ঢ় য় ৎ
                ং  ঃ      ঁ
মানুষ- ম+আ+ন+উ+ষ
শব্দটিতে পাঁচটি ধ্বনি পাঁচটি বর্ণের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়েছে।
স্বরবর্ণের শ্রেণিবিভাগ
স্বরবর্ণকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়- হ্রস্বস্বর ও দীর্ঘস্বর
যে সকল স্বরবর্ণ উচ্চারণের সময়পেক্ষাকৃত কম সময় লাগে, তাকেই হ্রস্ব স্বর বলে। যেমন- অ, ই, উ, ঋ
যে সকল বর্ণ উচ্চারণের সময় অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ সময় লাগে তাকেই দীর্ঘস্বর বলে। যেমন- আ, ঈ, ঊ, এ, ঐ, ও, ঔ
প্লুত স্বর
হ্রস্ব ও দীর্ঘ স্বর ছাড়া বাংলায় আরেক প্রকার সুর আছে তাকে বলা হয় প্লুত স্বর। সাধারণতঃ সঙ্গীত, উচ্চস্বরে আহ্বান, ক্রন্দন ইত্যাদিতে প্লুত স্বর ব্যবহার করা হয়। যেমন ওরে আমার কি হলো রে-এ-এ-এ।
সন্ধি স্বর
দুটি স্বরধ্বনি একত্রে উচ্চারিত হলে তাকে সন্ধিস্বর বলে। যেমন- দৈব, গৌরব। প্রথমটিতে ও+ই=ঐ এবং দ্বিতীয়টিতে ও+উ=ঔ একসঙ্গে উচ্চারিত হয়েছে।
উচ্চারণের স্থান অনুযায়ী ব্যঞ্জনবর্ণের শ্রেণিবিভাগ
স্পর্শ বর্ণ
ক থেকে ম পর্যন্ত পঁচিশটি বর্ণকে স্পর্শবর্ণ। যে সকল বর্ণ উচ্চারণের সময় জিহ্বার কোনো না কোনো অংশ কন্ঠ, তালু, মূর্ধা, দন্ত এবং ওষ্ঠ স্পর্শ করে, সেগুলিকে স্পর্শ বর্ণ বলে।
এই পঁচিশটি বর্ণ পাঁচটি বর্গে বিভক্ত। যেমন- ক থেকে ঙ হচ্ছে ক-বর্গ।
স্পর্শ বর্ণ পাঁচ প্রকার
  বর্ণ                             উচ্চারণের স্থান                       বর্ণের নাম
ক বর্গ                                কন্ঠ                                   কন্ঠ্য
চ বর্গ                                 তালু                                     তালব্য
ট বর্গ                                 মূর্ধা                                  মূর্ধন্য
ত বর্গ                                    দন্ত                                   দন্ত্য
প বর্গ                                ওষ্ঠ                                   ঔষ্ঠ্য
কন্ঠ্য বর্ণ
উচ্চারণের সময় যে সব বর্ণ জিহ্বার মূল কন্ঠের পাশে থাকা তালুর কোমল অংশ স্পর্শ করে উচ্চারিত হয় তাকে কন্ঠ্য বর্ণ বলে। ক-বর্গের বর্ণগুলি হল- ক, খ, গ, ঘ, ঙ
তালব্য বর্ণ
যে সমস্ত বর্ণ উচ্চারণের সময় জিহ্বার মধ্যভাগ তালুকে স্পর্শ করে সেগুলিকে তালব্য বর্ণ বলে। চ-বর্গের বর্ণগুলি তালব্য বর্ণ। যেমন- চ, ছ, জ, ঝ, ঞ
মূধর্ন্য বর্ণ
যে সমস্ত বর্ণ উচ্চারণের সময় জিহ্বার অগ্রভাগ উলটে মূর্ধা স্পর্শ করে, সেগুলিকে মূর্ধন্য বর্ণ বলে। এই বর্গের বর্ণগুলি হল- ট, ঠ, ড, ঢ, ণ।
দন্ত্য বর্ণ
যে সমস্ত বর্ণ উচ্চারণের সময় জিহ্বার অগ্রভাগ দাঁতের উপরের পাটির মূলকে স্পর্শ করে তাকে দন্ত্য বর্ণ বলে। যেমন- ত, থ, দ, ধ, ন।
ঔষ্ঠ্য বর্ণ
যে সমস্ত বর্ণ ওষ্ঠ ও অধরের সাহায্যে উচ্চারিত হয় তাকে ওষ্ঠ্য বর্ণ বলে। প-বর্গের বর্ণগুলি ওষ্ঠ্য বর্ণ। যেমন- প, ফ, ব, ভ, ম।
উষ্ম বর্ণ
শ, স, ষ, হ- এই চারটি বর্ণের উচ্চারণে উষ্ম বা শ্বাসের প্রাধান্য আছে বলে এগুলিকে উষ্ম বর্ণ বলে। এই বর্ণগুলির আরেক নাম শিস্‌ ধ্বনি।
অন্তঃস্থ বর্ণ
য, র, ল, ব- এই চারটি বর্ণ স্পর্শ বর্ণ ও উষ্মবর্ণের অন্তঃ অর্থাৎ মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত বলে এগুলির নাম অন্তঃস্থ বর্ণ। আবার ষ, ব এই স্বর দুটিকে অর্ধস্বর এবং র এবং ল কে তরলস্বর বলা হয়েছে।
পার্শ্বিক ধ্বনি
ল-উচ্চারণের সময় জিহ্বার দুই পাশ থেকে বাতাস নির্গত হয় বলে এটিকে পার্শ্বিক ধ্বনি বলে।
কম্পনজাত ধ্বনি
র-এর উচ্চারণের সময় দন্তমূল জিহ্বার অগ্রভাগ দ্বারা তাড়িত হওয়ায় এই বর্ণের ধ্বনির নাম কম্পনজাত ধ্বনি।
অযোগবাহ বর্ণ
বাংলায় দুটি বর্ণ অযোগবাহ- ং, ও
আশ্রয়স্থানভাগী বর্ণ
বাংলায় আশ্রয়স্থানভাগী বর্ণ হল- ঃ
ধ্বনির স্থান অনুযায়ী ব্যঞ্জনবর্ণের শ্রেণিবিভাগ
শুধু উচ্চারণের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নয় ধ্বনির গভীরতার প্রতি লক্ষ্য রেখেও ব্যঞ্জনবর্ণের শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে। এগুলি হল-
১. অঘোষবর্ণ
যে সকল বর্ণ উচ্চারণের সময় ধ্বনি গাম্ভীর্যহীন এবং মৃদুভাবে উচ্চারিত হয় তাকে অঘোষ বর্ণ বলে। প্রতি বর্গের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ণ অঘোষ বর্ণ। যেমন- ক, খ, চ, ছ, ট, ঠ, ত, থ, প, ফ।
২. ঘোষ বর্ণ
যে সকল বর্ণ উচ্চারণের সময় ধ্বনি গাম্ভীর্যযুক্ত হয়ে উচ্চারিত হয় তাকে ঘোষ বর্ণ বলে। প্রতিটি বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ণ ঘোষ বর্ণ। যেমন- গ, ঘ, ঙ, জ, ঝ, ঞ, দ, ধ, ন, ড, ঢ, ণ, ব, ভ, ম।
৩. অল্পপ্রাণ বর্ণ
যে সমস্ত বর্ণ উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু কম লাগে তাকে অল্পপ্রাণ বর্ণ বলে। প্রত্যেক বর্গের প্রথম ও তৃতীয় বর্ণ অল্পপ্রাণ বর্ণ। যেমন- ক, গ, চ, জ, ট, ড, ত, দ, প, ব।
৪. মহাপ্রাণ বর্ণ
যে সমস্ত বর্ণ উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ু বেশি লাগে তাকে মহাপ্রাণ বর্ণ বলে। প্রত্যেক বর্গের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ণ মহাপ্রাণ বর্ণ। যেমন- খ, ঘ, ছ, ঝ, ঠ, ঢ, থ, ধ, ফ, ভ।
৫. ঘৃষ্ট ধ্বনি
বাগ্‌যন্ত্রের ঘর্ষণের ফলে যে ধ্বনি উচ্চারিত হয় তাকে ঘৃষ্ট ধ্বনি বলে। জিহ্বা ও তালুর ঘর্ষণের ফলে এই ধ্বনির সৃষ্টি হয়। যেমন- চ, ছ, জ, ঝ।
৬. স্পৃষ্ট ধ্বনি
জিহ্বা বাগ্‌যন্ত্রের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ করার ফলে যে ধ্বনির সৃষ্টি হয় তাকে স্পৃষ্ট ধ্বনি বলে। যেমন- ক, গ, ট, ড, ত, দ, প, ব, খ, ঘ, ঠ, চ, থ, ধ, ফ, ভ।
৭. নাসিক্যধ্বনি বা আনুনাসিক বর্ণ
প্রতিটি বর্গের পঞ্চম বর্ণগুলি  মুখগহ্বরের কন্ঠ, ওষ্ঠ, মূর্ধা, তালুর দ্বারা উচ্চারিত হলেও মূলত নাসিকার সাহায্যে উচ্চারিত হয়, তাই সেগুলিকে নাসিক্যধ্বনি বা আনুনাসিক বর্ণ বলে। যেমন- ঙ, ঞ, ণ, ন, ম।

উচ্চারণ স্থান
ঘোষ বর্ণ
অঘোষবর্ণ
স্বরবর্ণ
অল্পপ্রাণ
মহাপ্রাণ
আনুনাসিক
অল্পপ্রাণ
মহাপ্রাণ
কন্ঠ
অ, আ
য, হ
তালু
ই, ঈ
জ, ঘ
ছ, শ
মূর্ধা
ড, র
ঠ, ষ
দন্ত
দ, ল
থ, স
ওষ্ঠ
উ, ঊ
কন্ঠ-তালু
এ, ঐ





কন্ঠ-মূর্ধা
ও, ঔ





5.0 / 5
1 review
1
0
0
0
0
Shamim Ahmed Laskar
12 Jun 2023
Sir excellent work you have done and we will be benefited for all these.

Website Developed by:

DR. BISHWAJIT BHATTACHARJEE
Assistant Prof. & Former Head
Dept. of Bengali, Karimganj College
Karimganj, Assam, India, 788710

+917002548380

bishwa941984@gmail.com
Important Links:
Back to content