পদ-প্রকরণ
পদ এর সংজ্ঞা: শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হয়ে পদ গঠিত হয়। শব্দ এবং পদ উভয়ই বর্ণসমষ্টি হলেও এই দুটির মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। কয়েকটি বর্ণের মিলনে যে শব্দ গঠিত হয়, তা যেমন মনের ভাবকে প্রকাশ করে তেমনি পদও মনের ভাবকে প্রকাশ করে। কিন্তু সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ শুধুমাত্র কয়েকটি শব্দের দ্বারা সম্ভব নয়, তার জন্য পদের সাহায্য নিতে হয়। যেমন- "আমি স্কুলে ভাত যাই খেয়ে', এখানে কতগুলি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে কিন্তু মনের ভাব সঠিক ভাবে প্রকাশ পায়নি। "আমি ভাত খেয়ে স্কুলে যাই' বললে সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায়। এখানে "স্কুল' শব্দে "এ' বিভক্তি যুক্ত হয়ে বাক্যটিকে অর্থপূর্ণ করে তুলেছে। সুতরাং বলা যায় শব্দ বাক্যে ব্যবহৃত হলে তার একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থ থাকে, শুধুমাত্র শব্দের এই ক্ষমতা নেই।
পদের শ্রেণিবিভাগ
প্রধানত পদকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়- নামপদ ও ক্রিয়াপদ। যে শব্দের সঙ্গে কারক, বিভক্তি প্রভৃতি যুক্ত হয় তাকে নামপদ বলে এবং ধাতুর সঙ্গে কালবাচক বিভক্তি যুক্ত হলে তাকে ক্রিয়াপদ বলে। যেমন- জল+এ= জলে, নামপদ; খেল+ছে=খেলছে, ক্রিয়াপদ।
অর্থ এবং প্রয়োগের দিকে লক্ষ্য রেখে নামপদকে চারভাগে ভাগ করা হয়েছে- ১. বিশেষ্য ২. বিশেষণ ৩. সর্বনাম ৪. অব্যয়।
সুতরাং পদ পাঁচ প্রকার- বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।
১. বিশেষ্য
যে পদের দ্বারা কোনো বস্তু, সংজ্ঞা, গুণ, জাতি, কাজ, ভাব, অবস্থা বা সমষ্টির নাম বুঝায় তাকে বিশেষ্য বলে। সহজ কথায় যার দ্বারা কোনো কিছুর নাম বুঝায় তাই বিশেষ্য। যেমন- পর্বত, জল, করিমগঞ্জ, গুয়াহাটি, তনুশ্রী, রাজর্ষি, সুইটি, স্নিগ্ধা, জনতা, সুখ প্রভৃতি।